বাসের ভাড়া এখন ‘স্মার্টকার্ডে ’! বিড়ম্বনার দিন শেষ



রাজধানী ঢাকার রাস্তায় চলতে যেয়ে বাসের হেল্পারের সাথে ভাড়া নিয়ে ঝামেলায় পড়েন নি এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। অল্প দূরুত্বে বাড়তি ভাড়া এবং ভাড়া আদায়ের সময় বাকবিতণ্ডা করতে যেয়ে অস্বস্তিতে পড়েন যাত্রী হেল্পার উভয়েই। এমন পরিস্থিতিতে অনে

কেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাগজের টাকার পরবির্তে স্মার্টকার্ডের প্রচলন কথা ভেবে হয়ত আফসোস করে বলেন, ‘ইস, আমাদের দেশেও যদি তা চালু হতো’! সুখবর হচ্ছে বাসের ভাড়া এখন ‘স্মার্টকার্ডে’র মাধ্যমে পরিশোধ করা যাচ্ছে। বাংলাদেশেও পাবলিক বাসে শুরু হয়েছে স্মার্টকার্ডের ব্যবহার। এই স্মার্টকার্ড ব্যবহার করেই নির্ধারিত ভাড়া পরিশোধ করতে পারবেন যাত্রীরা। পরীক্ষামূলকভাবে এই সার্ভিস শুরু করেছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশন (বিআরটিসি)। রাষ্ট্রীয় এ পরিবহন সংস্থাটির এ উদ্যেগ যেন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অগ্রযাত্রারই অংশ বিশেষ।

যে রুটে প্রযোজ্য

স্মার্টকার্ডের মাধ্যমে ভাড়া পরিশোধ করার এই কার্যক্রমটি শুরু হয়েছে মাত্র একটি রুটে। আব্দুল্লাহপুর টু মতিঝিল রুটে চলাচলরত বিআরটিসির মোট ৩০টি এসি বাসে এখন স্মার্টকার্ডে ভাড়া নেয়া হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মতিঝিল থেকে আব্দুল্লাহপুর এবং আব্দুল্লাহপুর থেকে মতিঝিল উভয় দিকের যাত্রীরা এ সার্ভিসটি পাচ্ছেন। মোট ১২টি স্টপেজে প্রায় ১০ মিনিট পরপরই একটি করে বাস চলাচল করছে বলে জানা গেছে।

‌‌‘সকল পরিবহনে এক কার্ড’ স্লোগান নিয়ে জাপান ভিত্তিক দাতা সংস্থা জাইকার সহায়তায় এ কার্যক্রমটি শুরু হয়েছে। স্মার্টকার্ডটির নাম দেয়া হয়েছে র‌্যাপিড কার্ড। যা বাস্তবায়ন করছে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কমিটি (ডিটিসিএ)। আর এ কাজটিতে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে এন-ওয়েভ কোম্পানি লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান।

কার্ড রিচার্জ করার পদ্ধতিঃ

২০০ টাকা প্রাথমিক চার্জ অবশিষ্ট ২০০ টাকা কার্ডের মূল্য দিয়ে মোট ৪০০টাকায় পাওয়া যাচ্ছে এই র‌্যাপিড কার্ড। তবে ক্রয়ের পর র‌্যাপিড কার্ড ব্যবহারকারী (নন রেজিস্টার্ড) যদি কার্ড ফেরত দিতে চান তবে জমাকৃত রিচার্জের টাকার ৫ শতাংশ কেটে নেওয়ার পর বাকি টাকা এক কর্মদিবস পর ফেরত পাবেন।

কার্ড ব্যবহারকারী প্রতিবার সর্বচ্চ ১ হাজার টাকা রিচার্জ করতে পারবেন এবং সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকার বেশি ব্যালেন্স রাখতে পারবেন না। আর সর্বনিম্ন রিচার্জ করা যাবে ১০০ টাকা। এছাড়া কার্ডের ব্যালেন্স শেষ হয়ে গেলে একবার কার্ডটি ব্যবহার করা যাবে। তবে পরবর্তী রিচার্জের পর ধার নেয়া টাকা কেটে নেয়া হবে।

এন-ওয়েভ কোম্পানির সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ বদিউজ্জামান বলেন, এখন পর্যন্ত একটি রুটে বিআরটিসি বাসে এই সার্ভিস পাওয়া যাচ্ছে। এটি এটিএম কার্ডের মতই একটি স্মার্টকার্ড, যাকে আমরা বলছি- ‘র‌্যাপিড কার্ড’। পরিবহন ব্যবস্থায় সমন্বিত ই-টিকেটিং পদ্ধতি প্রবর্তনের লক্ষ্যে এই স্মার্টকার্ডটি চালু করা হয়েছে। এটি এমনভাবে প্রস্তুত করা যে, পরবর্তীতে চাইলে সব পরিবহনেই ব্যবহার করা যাবে।

র‌্যাপিড পাসের বিষয়ে Rapid Pass ওয়েব সাইট থেকে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মতিঝিল লোকাল অফিস, বৈদেশিক বিনিময় শাখা, এ্যালিফ্যান্ট রোড শাখা, বনানী শাখা, উত্তরা শাখা ও সোনারগাঁও শাখা থেকে র‌্যাপিড পাস বা স্মার্টকার্ডটি ক্রয় ও ব্যালেন্স রিচার্জ করা যাবে। এছাড়াও আব্দুল্লাহপুর, হাউজবিল্ডিং, বনানী, শাহবাগ ও মতিঝিল টিকিট কাউন্টার থেকে এই কার্ড ক্রয় ও রিচার্জ করা যাবে।

মুহাম্মদ বদিউজ্জামান জানান, গত ১৬ মে থেকে এটি পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়েছে। ১২০ জন যাত্রী এই কার্ড ব্যবহার করছেন। কোন ধরনের প্রচারণা না থাকলেও যাত্রীরা এটি ব্যবহারে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। সামনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই কার্ডের কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। তখন এর ব্যবহার আরো বেড়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

Source: bangla.24livenewspaper.com