প্রতি দশ হাজার মানুষে ১৪৫ জন বিজ্ঞানী ইজরায়েলে

-ওয়ারিশ আজাদ নাফি

মাত্র নব্বই লাখ জনসংখ্যার দেশ ইজরায়েল। কিন্তু প্রতি দশ হাজার মানুষে ১৪৫ জন বিজ্ঞানী/ইঞ্জিনিয়ার্। বিশ্বের সর্বোচ্চ আনুপাতিক হারে।
আমাদের ঢাকা শহরে জনসংখ্যা দেড় কোটি। ইজরায়েলের দেড় গুণ।
ইজরায়েলের এই টেকনোলজিক্যাল রাজত্বের কারণ কি? কারণ আর কিছু না। ইজরায়েল প্রতি বছর তার মোট জিডিপির ৪.৬৫ পার্সেন্ট রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্টে খরচ করে যার পরিমাণ ১৩ বিলিয়ন ডিলার্।প্রতি দশ হাজার মানুষে ১৪৫ জন বিজ্ঞানী ইজরায়েলে

২০১৩ সালে আমেরিকার বোস্টন ম্যারাথনে সন্ত্রাসী হামলার সময়ের কথা। হাজার হাজার মানুষ ম্যারাথন দেখতে রাস্তার দু পাশে ভীড় করেছে। এ সময় ফাটল বোম। ৩জন মানুষ মারা গেল, ২৬৪ জন আহত হলো।

হোয়াইট হাউসের নির্দেশে সাথে সাথে তদন্তে নামল এফ বি আই। সাথে সাথে মানে যে মুহুর্তে বম্ব ব্লাস্ট হয়েছে সে মুহুর্ত থেকেই। টানা তিনদিন ১০১ ঘন্টা এফ বি আইর টেক এক্সপার্টরা ১৩০০০ ভিডিও ফুটেজ আর ১লক্ষ বিশ হাজার ফটো দেখে বোমা হামলা কারীকে সনাক্ত করল। সবই হলো কম্পিউটারের সামনে বসে। এই তের হাজার ভিডিওর রান টাইম কম করেও তেরশ ঘন্টা হবে। তাহলে কিভাবে ১০১ ঘন্টায় এফ বি আই অসংখ্য ভিডিওকে দেখে ফেলল। কি টেনে টেনে? না অসম্ভব।

আলোচনায় আসল সার্ভেইল্যান্ড ভিডিও ফুটেজ খুজে অপরাধী সনাক্ত করার এক অসাধারণ প্রযুক্তি ভিডিও সিনোপসিস। যেটি ব্রিফক্যাম নামে এক ইজরায়েলি টেক কোম্পানির প্রোডাক্ট। এই ভিডিও সিনোপসিস প্রযুক্তির মাধ্যমে ১০ ঘন্টার একটা ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ড ,অবজেক্টস কে সুক্ষতম ভাবে বিশ্বেষণ করে মাত্র ১০ মিনিটেই কমপ্লিট অবজেক্টস সার্চ করা যায়।ভিডিও সিনোপসিস আপনাকে ১০ ঘন্টার রান টাইমের একটা সার্ভেলেইন্স ফুটেজে আসা বিভিন্ন বস্তু ,ব্যাক্তিকে বিভিন্ন এঙ্গেলে পর্যবেক্ষণ করে পুরো ভিডিওটাকে সামারাইজ করে মাত্র কয়েক মিনিটে নিয়ে আসবে। তারপর ভিডিও সার্চ টুল দিয়ে আপনি সহজেই সন্দেহ জনক ব্যাক্তি বা বস্তু কে সনাক্ত করতে পারবেন।

এই ব্রিফক্যাম প্রযুক্তির আবিস্কারের গল্পটা শুনেন।

ব্রিফক্যামের কো ফাউন্ডার ইউনিভার্সিটি অফ জেরুজালেমের স্মিউল পেলেগ বলেন।
” আমার একজন ছাত্রের তিন জন সন্তান ছিল। সেই তার বাসার অনুষ্ঠানের লম্বা ভিডিও গুলোকে কমপ্যাক্ট করার এই আইডিয়া নিয়া আসেন। ”

পেলেগের আরেক বন্ধু ছিল ইজরায়েলি মিলিটারিতে। সে পেলেগের কাছে আইডিয়ার কথা শুনে ততক্ষনাত সুপিরিয়রদের সাথে আলোচনা করে পেলেগ আর তার ছাত্রের জন্য ফান্ডিং এর ব্যাবস্থা করে দেন। যাতে তারা প্রজেক্ট টাকে বাস্তবে রুপ দিতে পারেন।

একজন সাধারণ সিভিলিয়ানের মাথা থেকে বের হওয়া আইডিয়া গুরুত্ব দিয়ে সেটিকে ডিফেন্স টেকনোলজিতে পরিণত করে ব্রিফক্যাম আজ এফ বি আই ,মোসাদ ,অস্ট্রেলিয়ান পুলিশসহ বিশ্বের নামি দামি ম্যাক্সিমাম সিকিউরিটি সংস্থায় ব্যাবহার হয়ে আসতেছে

দিস ইজ ইজরায়েল মাই বয়। টেক ওয়ার্ল্ডে যা;কে বলা হয় ল্যান্ড অফ স্টার্ট আপ্স
আমেরিকার সিলিকন ভ্যালির পরে ইজরায়েলিই বিশ্বের সর্বোচ্চ সংখ্যা;ক স্টার্ট আপ শুরু করে প্রতি বছর্।

মাত্র নব্বই লাখ জনসংখ্যার দেশ ইজরায়েল। কিন্তু প্রতি দশ হাজার মানুষে ১৪৫ জন বিজ্ঞানী/ইঞ্জিনিয়ার্। বিশ্বের সর্বোচ্চ আনুপাতিক হারে।
আমাদের ঢাকা শহরে জনসংখ্যা দেড় কোটি। ইজরায়েলের দেড় গুণ।

ইজরায়েলের এই টেকনোলজিক্যাল রাজত্বের কারণ কি? কারণ আর কিছু না। ইজরায়েল প্রতি বছর তার মোট জিডিপির ৪.৬৫ পার্সেন্ট রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্টে খরচ করে যার পরিমাণ ১৩ বিলিয়ন ডিলার্।
আমাগো দেশে অবশ্য রিসার্চ জিনিসটারে পাত্তা দেয়ার সময় নাই। ইজরায়েলে বিভিন্ন স্কুল কলেজের সায়েন্স ফেয়ারে ইজরায়েলি সরকারের প্রতিনিধিরা চেক নিয়া হাজির থাকে। কোন ছাত্রের প্রজেক্ট পছন্দ হলে। তার বয়স হোক ১৫-১৬ তাকে ফান্ডিং দেয়া হয়। কর তুমি তোমার গবেষণা। না পারলে আরো দেয়া হবে
আর আমাগোরে দেয়া হয় এ পেলাস

এ কারণে ৯০ লাখ মানুষের দেশ রে খোদ আমেরিকাও গুইণা চলে। ইজরায়েলি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম বর্তমানে বিশ্বসেরা যেটা পাওয়ার জন্য আমেরিকা বহুদিন ধরে চেষ্টা করে আসতেসে।

ফেসবুকে ইজরায়েলি পণ্য বয়কট করার আন্দোলন করেন তো? লাভ নাই। ফেসবুক ,গুগল ..ইয়াহু ,এল জি ,স্যামসাং সহ অধিকাংশ হেভিওয়েট কোম্পানির আমেরিকার বাইরে আর এন্ড ডি সেন্টার হইল ইজরায়েলে।এই যে ফেসবুকে নতুন নতুন ফিচার আসতেসে তার মধ্যে কোনটা হয়ত ইজরায়েলি কোন এক টেকির উদ্ভাবন করা।

এবার আসি আরেক ছোট্ট দেশ সুইজারল্যান্ডের কথায়। সুইজারল্যান্ড তার মোট জিডিপির ৪% খরচ করে রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্টে। ফলাফল কি?

ফলাফলা আর কিছুনা মাত্র ৮০ লক্ষ জনসংখ্যার দেশ সুইজারল্যান্ডের দুইটা ইউনিভার্সিটি বিশ্বের সেরা ২০ ইউনিভার্সিটির তালিকায়। যেখানে ১৫০ কোটি মানুষের ইন্ডিয়ার কোন ভার্সিটি সেরা ২০০ তে নাই।

মাত্র ৮০ লাখ মানুষের দেশ। ঢাকা শহরের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক। সে দেশকে এখন বলা হয় নেশন অফ সায়েন্স। যেখানে বিখ্যাত CERN অবস্থিত। যেখানে আছে বিশ্বের সর্ববৃহত পার্টিকেল এক্সিলারেটর্।

এই ছোট্ট দেশগুলো রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্টে ইনভেস্ট করে আজকে প্রমাণ করেছে জনসংখ্যা আর দেশের আয়তন এইগুলা শুধু এক একটা সংখ্যা। আমরাও যদি করতাম ছোট্ট বাংলাদেশের ভয়ে বড় ইন্ডিয়া কাঁপত

আর আমরা আছি এ প্লাস ,কে এক নাম্বার হইছে কে দুই নাম্বার হইছে এইসব নিয়া। আমাদের মেধাবী ছাত্ররা প্রজেক্ট নিয়া বইসা থাকে ফান্ডিং পায়না। এমনে নাচ গানের কথা উঠলে কোটি টাকা চাদা উঠে। জাতীয় পতাকার রেকর্ড করে বুক ফুলাই। এইগুলার কোন ভ্যালু নাই। আবার আমাদের কিছু পোলাপাইন কোমড়ে বোমা বাইন্ধা তাগো মতে ইসলাম কায়েম করতে নামে।

সায়েন্স রে নিজের আত্মা বানান ,দুনিয়া আপনার কথায় নাচবে।

সুত্র: সংগৃহিত